যমুনার বুকে ঘোড়ার গাড়ি!
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০১-০১-২০২৫ ০৩:২৮:৪০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০১-০১-২০২৫ ০৩:২৮:৪০ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে তীব্র নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে এই উপজেলার বেশ কয়েকটি নৌরুট বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কৃষিপণ্য পরিবহনসহ বিভিন্ন কাজে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অপরদিকে যমুনার বুকে নতুন চর জেগে ওঠায় সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
গত কয়েকবছর ধরেই এই উপজেলায় বছরের প্রায় ছয়মাসের বেশি সময় ধরে যমুনা নদীর নাব্যতা সংকট থাকে। এছাড়া গত কয়েকবছরে যমুনা নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। যমুনার মূল স্রোতধারা এখন চালুয়াবাড়ী ও কাজলা ইউনিয়নের পূর্ব সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া কর্ণিবাড়ী ও বোহাইল ইউনিয়নে পশ্চিম সীমানা দিয়ে যমুনা প্রবাহিত হচ্ছে। এ চারটি ইউনিয়নের পশ্চিমে সারিয়াকান্দি উপজেলা সদর এবং বগুড়া জেলা সদর অবস্থিত। তাই দুটি ইউনিয়নের পশ্চিমে বিশালাকৃতির চরের সৃষ্টি হয়েছে এবং যমুনার নাব্যতা সংকট বিরাজমান। নাব্যতা সংকটের জন্য উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলতাফ আলীর খেয়াঘাট, হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া ও নিজবলাইল খেয়াঘাট এবং চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি নৌঘাট বন্ধ হয়েছে। ফলে এসব নৌরুটে আর কোনও নৌকা চলাচল করছে না। নৌকার পরিবর্তে এসব নৌরুটে কৃষকরা ঘোড়ার গাড়িতে করে বেশি ভাড়া দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন করছেন। কেউবা পায়ে হেঁটে অনেক কষ্টে কৃষিপণ্য ও পশুখাদ্য পরিবহন করছেন। নাব্যতা সংকটে পুরো যমুনা নদীজুড়ে অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। এসব ডুবোচরে চলন্ত নৌকা আটকে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা।
এদিকে যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটে উপজেলার ব্যস্ততম সারিয়াকান্দি-মাদারগঞ্জ নৌরুটও বন্ধ হওয়ার মতো হয়েছিল। পরে এ নৌরুট খনন যন্ত্র দিয়ে খনন করা হয়েছে। ফলে কোনমতে নৌকাগুলো চলাচল করছে। তবে এ নৌরুট দিয়ে যখন নৌকা চলাচল করে তখন মনে হয় কোনও ড্রেনের মধ্যে দিয়ে নৌকাগুলো চলাচল করছে।
বর্তমানে যেখানে যমুনা নদীর মূল স্রোতধারা বয়ে চলেছে সেখান থেকে হাটশেরপুর ইউনিয়নের বলাইল বন্যা নিয়ন্ত্রণ স্পারের আনুমানিক দূরত্ব ৬ কিলোমিটার এবং হাসনাপাড়া স্পারের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। সদর ইউনিয়নের কালিতলা গ্রোয়েনবাঁধ হতে বর্তমান স্রোতধারার নদীর দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং দীঘলকান্দি হার্ডপয়েন্ট হতে দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের দেবডাঙা হার্ডপয়েন্ট হতে দূরত্ব ৪ কিলোমিটার।
এই দূরত্ব পাড়ি দিয়ে কৃষকদের ঘোড়া বা গরুর গাড়ি দিয়ে ফসলাদি বাড়িতে নিয়ে আসতে বিশাল অঙ্কের পরিবহন ভাড়া গুনতে হচ্ছে। যমুনায় পানি না থাকায় বিভিন্ন স্থানে বিশালাকার চরের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে পলিমাটি পরে বেশকিছু উর্বর ভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এসব উর্বর মাটিতে কৃষকেরা মরিচ, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, ধানসহ নানা ধরনের শাকসবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া প্রতিবছর এখানে বিশালাকার গো চারণভূমির সৃষ্টি হচ্ছে। এসব গো চারণভূমিতে চরবাসী গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল পালন করে লাভবান হচ্ছেন।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স